শুক্রবার, ২০শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডাক্তারদের ভূঁয়া ডিগ্রীর ব্যবহার ও চিকিৎসার খারাপ ব্যবস্থা!

জন্মের সময় মানুষ খুব অসহায়ভাবে জন্ম নেয়।পরবর্তীতে বিভিন্ন রোগ শরীরে বাসা বাধে।সেই রোগ সারানোর জন্য তখন ছুটতে হয় ডাক্তার ডিগ্রীধারী মানুষদের কাছে। কিন্তু যারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, দেশের উচ্চ শিক্ষিত মানুষ।মানবতার সেবাই যাদের ধর্ম।সেই ডাক্তারগন যখন রোগাক্রান্ত অসহায় মানুষগুলিকে বিভ্রান্ত করে, প্রতারিত করে নানা কায়দায় তখন কেমন লাগে।

আমাদের দেশের ডাক্তারদের মানষিক অবস্থা এমন যেন ডাক্তার হয়ে মাসে ২-৩ লক্ষ টাকা কামাই না করলে তাদের “মহাভারত” অশুদ্ধ হয়ে যাবে।আর তাই তো তাদের নামের পার্শ্বে এমন সব শট কোর্স বা ট্রেনিংকে তাদের ডিগ্রী হিসাবে লিখেন যা লিখা তাদেরই নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ অনুযায়ী নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অথচ সমাজের বিবেকবান এইসব ডাক্তার শুধুমাত্র প্রাইভেট চিকিৎসায় অধিক রোগী পাবার জন্য প্রেসক্রিপশানে ব্যবহার নিষিদ্ধ শব্দ সংকেত সমুহ যেমন PGT, BHS, FCPS(PART-1), (PART-2), MS(IN COURSE), (PART-1),(PART-2), (THESIS PART), (LAST PART), (COURSE COMPLETED) ইত্যাদি এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত ফেলোশিপ ও ট্রেনিং সমুহ যেমন FRHS, FICA, FICS, FAMS, FIAGP ইত্যাদি যাহা কোন স্বীকৃত চিকিৎসা শিক্ষা যোগ্যতা নহে লিখে যাচ্ছেন তাদের প্রেসক্রিপশান প্যাডে।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল এই সব ট্রেনিং ও ফেলোশিপসমুহ প্রেসক্রিপশান প্যাডে ব্যবহার জনসাধারণের সাথে প্রতারনামূলক অপরাধ হিসাবে উল্লেখ করেছে।এমনক কি কোন কোন ডাক্তার মাত্র ৬ মাসের CCD(BIRDEM) এর মত ট্রেনিং করে নিজেকে ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ লিখেন যাহা একটি দুঃসাহস।

অথচ প্রশাসন অথবা যে কেউ তার বিরুদ্ধে আইনী আশ্রয় গ্রহণ করলে BMDC আইন ২০১০ এর ২৯(২)ধারা অনুযায়ী সবোচ্চ ৩ বৎসর কারাদন্ড অথবা ১ লক্ষ টাকা অথদন্ড অথবা উভয় দন্ড হতে পারে। যে ট্রেনিংটি প্রেসক্রিপশানে ব্যবহার করাই নিষিদ্ধ সেই ধরনের একটি ট্রেনিং করে নিজেকে বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে হাজার হাজার মানুষের সাথে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করলেও সেই সব ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেওয়ার যেন কেউ নাই।

অথচ নওগাঁর মহাদেবপুরেই কিছুদিন আগেও একজন পল্লী চিকিৎসককে খুব সামান্য অপরাধ (ডা.) পদবী ব্যবহার করায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল দেওয়া হয়।আমাদের প্রশাসনটাই যেন এরকম। BMDC সুনির্দিষ্ট আইন থাকা সত্বেও ভূঁয়া ডিগ্রী ব্যবহারকারী চিকিৎসকদের জেল জরিমানা করতে উদাসীন। কারণ কর্মবিরতি ও চেম্বার বন্ধ হতে পারে। আমাদের মত সাধারণ মানুষদের সচেতন হওয়া ছাড়া কোন গতি নাই।এরজন্য বেছে নিন প্রযুক্তি। বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল(BMDC)-এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।

জেনে নিন ডাক্তারদের স্বীকৃত শিক্ষা যোগ্যতার ডিগ্রীসমুহ।প্রেসক্রিপশানে ব্যবহার নিষিদ্ধ শট ট্রেনিং বা ফেলোশিপ ব্যবহার করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে এমন সব ডাক্তারদের বিরুদ্ধে সমাজে সচেতনতা তৈরী করুন।কারন এইসব ডাক্তারকে বিষেশজ্ঞ ভেবে সাধারণ মানুষ তাদের কাছে বিশেষজ্ঞের ফি দিয়ে বিশেষজ্ঞ সেবা নিতে যাচ্ছেন অথচ বিশেষজ্ঞ সেবা না পেয়ে কখন কখন ভুল চিকিৎসা পাচ্ছেন।

সুতরাং সমাজের সচেতন ব্যক্তি হিসাবে আমাদের আপনাদের উচিৎ এই বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরী করা যাতে আমাদের সমাজের মানুয আমাদেরই আপনজন চিকিৎসার ভোগান্তি খেকে মুক্তি পায় ও সুস্হ্য ও সুন্দর জীবন যাপন করতেে পারে।
নিজে সচেতন হোন এবং অন্যকে সচেতন করুন। (সংগৃহীত ও সংশোধিত)

এই বিভাগের আরো খবর